মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দুর্গাপুজো প্রসঙ্গে বিশ্বভারতীর (Visva-Bharati) উপাচার্যের 'আপত্তিকর' মন্তব্যের প্রেক্ষিতে রিপোর্ট তলব করল প্রধানমন্ত্রীর দফতর। ঐতিহ্যবাহী উপাসনা গৃহে বসে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী বলেছিলেন, "দুর্গাপুজো ইংরেজদের পদলেহন করার জন্য শুরু হয়েছিল।" এমনকী, তিনি আরও বলেছিলেন, "দুর্গামঞ্চে অনেক ধরনের পানীয় পান করার সুযোগ ছিল।" নিরাকার ব্রহ্ম মন্দিরে বসে উপাচার্যের এহেন মন্তব্যের বিরুদ্ধে আচার্য তথা প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছিল শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট।
মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতিষ্ঠিত শান্তিনিকেতনের উপাসনা গৃহ। যদিও, উপাসনা গৃহের সম্পূর্ণ নির্মাণ তিনি দেখে যেতে পারেননি। নিরাকার ব্রহ্মের উপাসনা ও সর্বধর্মকে সম্মান, আলোচনার জন্য দ্বার খোলা ছিল৷ এই উপাসনা গৃহ মহর্ষির তৈরি শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের অন্তর্গত। প্রতি বুধবার সকালে এখানে উপাসনার রেওয়াজ রয়েছে৷ এছাড়া, বিশেষ উপাসনাও হয়।
কী বলেছিলেন উপাচার্য?
গত ২২ ফেব্রুয়ারি এই উপাসনা মন্দিরে বসে কেন বিশ্বভারতী (Visva-Bharati) কর্তৃপক্ষ বসন্তোৎসব বন্ধ করেছে, তার ব্যাখ্যা দেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। এই ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, "আপনারা জানেন আজ দুর্গাপুজো বিশ্বের একটা অন্যতম পুজো হিসাবে স্বীকৃত হয়েছে। কিন্তু, দুর্গাপুজোর ইতিহাস যদি দেখেন, এই দুর্গাপুজো শুরু হয়েছিল বৃটিশদের পদলেহন করার জন্য। তৎকালীন রাজাদের মধ্যে প্রতিযোগিতা হত, কে ইংরেজ সাহেবদের দুর্গাপুজোর মঞ্চে নিয়ে আসবেন। সেই দুর্গামঞ্চে অনেক ধরনের অনুষ্ঠান হত ও অনেক ধরনের পানীয় পান করারও সুযোগ থাকত। পরবর্তীতে দুর্গাপুজো একটা ধর্মীয় অনুষ্ঠানে দাঁড়িয়ে যায়। কিন্তু, শুরু হয়েছিল ইংরেজদের পদলেহন করার জন্য।"
কী অভিযোগ জানাল শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট?
দুর্গাপুজো প্রসঙ্গে নিরাকার ব্রহ্মমন্দির তথা সর্বধর্ম সম্মানের পীঠস্থান ঐতিহ্যবাহী উপাসনা গৃহে বসে উপাচার্যের এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে ক্ষোভ প্রকাশ করে শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট। ১০ মার্চ ট্রাস্টের সম্পাদক অনিল কোনার বিশ্বভারতীর আচার্য তথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি দিয়ে অভিযোগ করেন ও প্রতিকার চান৷ পাশাপাশি শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, উপাসনা মন্দিরে বসে বিশ্বভারতীর (Visva-Bharati) উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী আশ্রমিক, পড়ুয়া, প্রাক্তনীদের বারংবার অপমান করছেন৷ উপাসনা গৃহের প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে ব্যক্তি আক্রমণ ও দুর্গাপুজো ঐতিহ্য নিয়ে মন্তব্য ঠিক নয়। সংবেদনশীল।
মন্তব্য করতে চায়নি বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ
মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতিষ্ঠিত শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেয়ে বিশ্বভারতীর (Visva-Bharati) ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব অশোক মাহাতর কাছে রিপোর্ট তলব করল প্রধানমন্ত্রীর দফতর। অর্থাৎ, উপাচার্যের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে জবাবদিহি চাইলেন আচার্য প্রধানমন্ত্রী। যদিও, এই প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করতে চায়নি বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours