Bangladesh Crisis: গেরুয়া নিশান ওড়ানোয় দেশদ্রোহিতার অভিযোগ বাংলাদেশের ১৮ হিন্দুর বিরুদ্ধে

Sedition Case: মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে হিন্দুদের, গেরুয়া নিশান বিতর্কে বললেন সনাতনী নেতা...
hindu_f
hindu_f

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: অপরাধ বলতে হিন্দুত্বের নিশান উড়িয়েছিলেন। গেরুয়া এই পতাকা ওড়ালে যে ‘সোনার বাংলা’য় (!) দেশদ্রোহিতার অভিযোগে (Sedition Case) অভিযুক্ত হতে হবে, তা কল্পনাও করতে পারেননি বাংলাদেশের কয়েকজন হিন্দু। মুসলমান অধ্যুষিত দেশে হিন্দুত্বের ধ্বজা ওড়ানোয় ১৮ জনের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার মামলা ঠুকে দেওয়া হয়েছে (Bangladesh Crisis)।

হিন্দুদের টার্গেট করা হচ্ছে (Bangladesh Crisis)

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের মতে, মহম্মদ ইউনূস জমানায় বেছে বেছে হিন্দুদের টার্গেট করা হচ্ছে। এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট তথা প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী রিপাবলিকান পার্টির ডোনাল্ড ট্রাম্পও। বাংলাদেশের ওই ঘটনায় ইতিমধ্যেই দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি বাংলাদেশের বিভিন্ন হিন্দুত্ববাদী সংগঠন চট্টগ্রামে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার জন্য আইন ও ট্রাইব্যুনালের দাবি জানিয়ে বিশাল সমাবেশ করেছে। তার পরে পরেই দায়ের হয়েছে দেশদ্রোহিতার মামলা। এই দাবিটি ছাড়াও আরও সাত দফা দাবি ছিল হিন্দুদের।

‘সনাতন জাগরণ মঞ্চে’র ব্যানারে সমাবেশ

সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছিল ‘সনাতন জাগরণ মঞ্চে’র ব্যানারে। প্রথমে সমাবেশে বাধা দেয় পুলিশ। পরে অবশ্য সফলভাবেই শেষ হয় সমাবেশ। এর পরেই ১৮ জনের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার মামলা ঠুকে দেওয়া হয়। যদিও সনাতন জাগরণ মঞ্চের দাবি, এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। বুধবার মামলা রুজু হওয়ার পর মঞ্চের পক্ষ থেকে চেরাগি পাহাড় মোড়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করা হয়। সেই সঙ্গে শুক্রবার, ১ নভেম্বর দেশের ৬৪টি জেলায় বিক্ষোভ সমাবেশের ডাকও দেওয়া হয়েছিল।

আরও পড়ুন: “ছেলে কাঁদে কতক্ষণ? যতক্ষণ না স্তন পান করতে পায়, তারপরই কান্না বন্ধ হয়ে যায়”

দেশদ্রোহিতার অভিযোগ

দেশদ্রোহিতার অভিযোগে অভিযু্ক্ত পুণ্ডরীক ধামের সভাপতি চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের একটি অংশ আট দফা দাবি তুলে ধরে এটিকে আওয়ামি লীগ ও ভারত সরকারের সমর্থনপুষ্ট হিসেবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছে (Bangladesh Crisis)।” তিনি বলেন, “এই প্রতিবাদগুলি রাজনৈতিক নয়, বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধেও নয়।” কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী জানান, প্রশাসনের ওপর সংখ্যালঘু অধিকার সংরক্ষণের কাজে চাপ সৃষ্টি করতেই এই প্রতিবাদ আন্দোলন। বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক মনোভাব চিরকালই প্রবল। ১৯৫১ সালে, তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে হিন্দু জনসংখ্যা ছিল ২২ শতাংশ। এখন সেটাই নেমে এসেছে ৮ শতাংশের নীচে। হিন্দু আমেরিকান ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৬৪ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে ধর্মীয় নির্যাতনের কারণে ১ কোটি ১০ লাখের বেশি হিন্দু বাংলাদেশ (Sedition Case) ছেড়ে চলে গিয়েছে।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে

যে ১৮ জনের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগ তোলা হয়েছে, চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানায় সেই মামলা দায়ের করেন জনৈক ফিরোজ খান। বাংলাদেশের ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধি অনুযায়ী, রাষ্ট্রদ্রোহের জন্য যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে। ভাইরাল হওয়া ভিডিওয় দেখা গিয়েছে, মাথায় গেরুয়া ফেট্টি বাঁধা একদল লোক চট্টগ্রামের নিউ মার্কেট এলাকায় জিরো পেয়েন্টে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার পাশে একটি গেরুয়া পতাকা উত্তোলন করছে। তার জেরেই দায়ের হয়েছে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা। কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী বলেন, “ওই গেরুয়া পতাকা তোলার সঙ্গে সনাতনী সংগঠনগুলির কোনও সম্পর্ক ছিল না। ঘটনাটি লালদিঘির প্রতিবাদস্থল থেকে ২ কিমি দূরে ঘটেছিল।” তিনি বলেন, “আমি কোনওভাবেই ওই মামলার সঙ্গে যুক্ত ছিলাম না। ঘটনাটার সময় আমি স্থানীয় বিএনপি অফিসে ছিলাম।”

মামলা প্রত্যাহারের দাবি

চট্টগ্রামের পুণ্ডরীক ধাম বাংলাদেশে হিন্দুদের দুটি পবিত্র তীর্থস্থানের একটি। কৃষ্ণ দাস সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্রও। তিনি বলেন, “রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা ৩১ অক্টোবর রাতে দায়ের করেন বিএনপি-র এক স্থানীয় নেতা। বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব এ বিষয়ে অবগত ছিলেন না। আমি শুনেছি যে আমায় গ্রেফতার করা হবে। তবে সারা বাংলাদেশে প্রতিবাদ আন্দোলন চলায় রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হচ্ছে। তাই গ্রেফতারিটা বিলম্বিত হতে পারে (Bangladesh Crisis)।”

ত্রুটিপূর্ণ মামলা

বাংলাদেশের এই হিন্দু নেতার মতে, মামলাটি অনেক দিক থেকেই ত্রুটিপূর্ণ। তিনি বলেন, “প্রথমত, যে পতাকাটিকে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা বলা হচ্ছে, তাতে চার কোণায় চারটি চাঁদ ও তারা আঁকা রয়েছে। এটি একটি ইসলামপন্থী পতাকা। দ্বিতীয়ত, যেটিকে জাতীয় পতাকা বলা হচ্ছে, তা পতাকা উত্তোলন সংক্রান্ত নিয়ম লঙ্ঘন করেই ওড়ানো হয়েছিল। তৃতীয়ত, গেরুয়া পতাকাগুলি আলাদা খুঁটিতে উত্তোলন করা হয়েছিল।” বাংলাদেশের হিন্দু সংগঠনগুলির অভিযোগ, সমাবেশে ব্যাপক ভিড় দেখেই প্রশাসনের একাংশ ও উগ্র ইসলামপন্থী দলগুলি অপপ্রচার শুরু করে। কৃষ্ণ দাস বলেন, “বাংলাদেশে হিন্দু সংগঠনগুলি তাদের কার্যক্রম শুরু করেছিল বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে।”

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে সরব হয়েছেন ট্রাম্পও। ট্যুইট-বার্তায় তিনি লেখেন, “বাংলাদেশে হিন্দু, খ্রিস্টান এবং অন্যান্য (Sedition Case) সংখ্যালঘুদের ওপর গণহিংসা ও লুটপাটের ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি। পুরো দেশটি এক ধরনের বিশৃঙ্খলার মধ্যে রয়েছে (Bangladesh Crisis)।”

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

  

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles