শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে ও বলরাম-মন্দিরে
অষ্টাদশ পরিচ্ছেদ
১৮৮৩, ৮ই এপ্রিল
শ্রীযুক্ত অধর সেনের দ্বিতীয় দর্শন—গৃহস্থের প্রতি উপদেশ
শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) সমাধিস্থ। ছোট খাটটিতে বসিয়া আছেন। ভক্তেরা চতুর্দিকে উপবিষ্ট। শ্রীযুক্ত অধর সেন কয়টি বন্ধুসঙ্গে আসিয়াছেন। অধর ডেপুটি ম্যাজিস্ট্র্রেট। ঠাকুরকে এই দ্বিতীয় দর্শন করিতেছেন। অধরের বয়স ২৯/৩০। অধরের বন্ধু সারদাচরণ পুত্রশোকে সন্তপ্ত। তিনি স্কুলের ডেপুটি ইন্স্পেক্টর ছিলেন; পেনশন লইয়া, এবং আগেও তিনি সাধন-ভজন করিতেন। বড় ছেলেটি মারা যাওয়াতে কোনরূপে সান্ত্বনালাভ করিতে পারিতেছেন না। তাই অধর ঠাকুরের নাম শুনাইয়া তাঁহার কাছে লইয়া আসিয়াছেন। অধরের নিজেরও ঠাকুরকে দেখিবার অনেকদিন হইতে ইচ্ছা ছিল।
সমাধি ভঙ্গ হইল। ঠাকুর দৃষ্টিপাত করিয়া দেখিলেন, একঘর লোক তাঁহার দিকে চাহিয়া রহিয়াছেন। তখন তিনি আপনা-আপনি কি বলিতেছেন।
ঈশ্বর কি তাঁর মুখ দিয়া কথা কহিতেছেন ও উপদেশ দিতেছেন?
শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—বিষয়ী লোকের জ্ঞান কখনও দেখা দেয়। এক-একবার দীপ শিখার ন্যায়। না, না, সূর্যের একটি কিরণের ন্যায়। ফুটো দিয়ে যেন কিরণটি আসছে। বিষয়ী লোকের ঈশ্বরের নাম করা—অনুরাগ নাই। বালক যেমন বলে, তোর পরমেশ্বরের দিব্যি। খুড়ী-জেঠীর কোঁদল শুনে “পরমেশ্বরের দিব্যি” শিখেছে (Kathamrita)!
“বিষয়ী লোকদের রোখ নাই। হল হল; না হল না হল। জলের দরকার হয়েছে কূপ খুঁড়ছে। খুঁড়তে, খুঁড়তে যেমন পাথর বেরুল, অমনি সেখানটা ছেড়ে দিলে। আর-এক জায়গা খুঁড়তে বালি পেয়ে গেল; কেবল বালি বেরোয়। সেখানটাও ছেড়ে দিলে। যেখানে খুঁড়তে আরম্ভ করেছে, সেইখানেই খুঁড়বে (Kathamrita) তবে তো জল পাবে।
আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির
আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”
আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?"
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours