ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে শ্রীযুক্ত রাখাল, প্রাণকৃষ্ণ, কেদার প্রভৃতি ভক্তসঙ্গে
তৃতীয় পরিচ্ছেদ
১৮৮৩, ১লা জানুয়ারি
ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের যশোদার ভাব ও সমাধি
ঠাকুর (Ramakrishna) ছোট খাটটির উপর গিয়া নিজের আসনে উপবিষ্ট হইয়াছেন। সর্বদাই ভাবে পূর্ণ। ভাবচক্ষে রাখালকে দর্শন করিতেছেন। রাখালকে দেখিতে দেখিতে বাৎসল্য রসে আপ্লুত হইলেন; অঙ্গে পুলক হইতেছে। এই চক্ষে কি যশোদা গোপালকে দেখিতেন (Kathamrita)?
দেখিতে দেখিতে আবার ঠাকুর সমাধিস্থ হইলেন। ঘরের মধ্যস্থ ভক্তেরা অবাক ও নিস্তব্ধ হইয়া ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের (Ramakrishna) এই অদ্ভুত ভাবাবস্থা দর্শন করিতেছেন।
কিঞ্চিৎ প্রকৃতিস্থ হইয়া বলিতেছেন, রাখালকে দেখে উদ্দীপন কেন হয়? যত এগিয়ে যাবে ততই ঐশ্বর্যের ভাগ কম পড়ে যাবে। সাধকের প্রথম দর্শন হয় দশভুজা ঈশ্বরী মূর্তি। সে-মূর্তিতে ঐশ্বর্যের বেশি প্রকাশ। তারপর দর্শন দ্বিভুজা—তখন দশ হাত নাই—অত অস্ত্রশস্ত্র নাই। তারপর গোপাল-মূর্তি দর্শন—কোন ঐশ্বর্য নাই—কেবল কচি ছেলের মূর্তি। এরও পারে আছে—কেবল জ্যোতিঃ দর্শন।
সমাধির পর ঠিক ব্রহ্মজ্ঞানের অবস্থা—বিচার ও আসক্তি ত্যাগ
তাঁকে লাভ হলে, তাঁতে সমাধিস্থ হলে—জ্ঞানবিচার (Kathamrita) আর থাকে না।
জ্ঞানবিচার আর কতক্ষণ? যতক্ষণ অনেক বলে বোধ হয়—
যতক্ষণ জীব, জগৎ, আমি, তুমি—এ-সব বোধ থাকে। যখন ঠিক ঠিক এক জ্ঞান হয় তখন চুপ হয়ে যায়। যেমন ত্রৈলঙ্গ স্বামী।
ব্রাহ্মণ (Ramakrishna) ভোজনের সময় দেখ নাই? প্রথমটা খুব হইচই। পেট যত ভরে আসছে ততই হইচই কমে যাচ্ছে। যখন দধি মুণ্ডি পড়ল তখন কেবল সুপ-সাপ! আর কোনও শব্দ নাই। তারপরই নিদ্রা—সমাধি। তখন হইচই আর আদৌ নাই।
আরও পড়ুনঃ “একটা ঢোঁড়ায় ব্যাঙটাকে ধরেছে, ছাড়তেও পাচ্ছে না—গিলতেও পাচ্ছে না…”
আরও পড়ুনঃ “বিবেক, বৈরাগ্যরূপ হলুদ মাখলে তারা আর তোমাকে ছোঁবে না”
আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?"
আরও পড়ুনঃ “বালক যেমন খেলাঘর করে, ভাঙে, গড়ে—তিনিও সেইরূপ সৃষ্টি, স্থিতি, প্রলয় কচ্ছেন”
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours