তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল
আধুনিক জীবন যাপনের ধরনের জেরে বাড়ছে নানা রোগ। হৃদরোগ, স্নায়ুর সমস্যা, স্থূলতা থেকে বন্ধ্যাত্বের মতো জটিল অসুখের অন্যতম কারণ খাবার, এমনটাই জানাচ্ছে চিকিৎসকদের একাংশ। তারা জানাচ্ছে, নিয়মিত খাদ্যাভ্যাস কেমন, তার ওপরই সুস্থতা অনেকটা নির্ভর করে। তাই কী খাওয়া হচ্ছে, কতটা পরিমাণে খাওয়া হচ্ছে, সে দিকে নজরদারি জরুরি। পুষ্টিবিদদের একাংশ জানাচ্ছে, খুব কম বয়স থেকেই নিয়মিত খাবারের তালিকায় থাকবে 'রামধনু'! 'রেইনবো' খাদ্যাভ্যাস শরীর ও মনকে (Body and Mind) সুস্থ রাখে।
'রেইনবো' খাদ্যাভাস কী?
চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছে, খাবারের তালিকায় রামধনু রাখার অর্থ নির্দিষ্ট কিছু ধরনের সব্জি এবং ফল নিয়মিত খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে। রামধনুতে (Rainbow Diet) থাকে সাত রকমের রং। নিয়মিত খাবারের তালিকাতেও রাখতে হবে এমন নানা রঙের সব্জি এবং ফল। এই প্রত্যেকটি ফল এবং সব্জির কিছু নির্দিষ্ট পুষ্টিগুণ রয়েছে। তাঁরা জানাচ্ছেন, বিট, গাজর, পালং শাক, ব্রকোলি, ডুমুর, রাঙা আলুর মতো সব্জির পাশপাশি পাকা পেঁপে, কমলালেবু, আপেল, আম, কলা, নাশপাতির মতো ফল নিয়মিত খেতে হবে। তবেই শরীর সুস্থ থাকবে। কিন্তু কেন ডায়েটে রামধনু রাখলে বাড়তি উপকার? চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছে, রামধনু সব্জি এবং ফল হিসেবে যেগুলো তালিকায় রাখা হয়, সেগুলো বাড়তি উপকারী। তার কিছু নির্দিষ্ট কারণ আছে বলেও তারা জানিয়েছে।
কমলা (Rainbow Diet)
পুষ্টিবিদেরা জানাচ্ছেন, কমলা রঙের গাজর নিয়মিত খেলে চোখের সমস্যা কমে। বর্তমানে তরুণ প্রজন্মের অধিকাংশই চোখের নানা সমস্যায় ভোগে। নিয়মিত গাজর খেলে রেটিনা ভালো থাকে। পাশাপাশি গাজর অন্ত্রের জন্যও বিশেষ উপকারী। আবার ফলের মধ্যে কমলা রঙের কমলালেবু কিংবা মাল্টা জাতীয় ফল রাখলে শরীরে ভিটামিন সি-র চাহিদা সহজেই পূরণ হয়। ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দেখা যায় না। আবার মাল্টা রক্ত সঞ্চালনে বিশেষ সাহায্য করে। তাই উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকিও কমে।
লাল
লাল রঙের সব্জি হিসেবে বিট কিংবা টমেটো নিয়মিত খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তারা জানাচ্ছে, এতে শরীরে ভিটামিন ই এবং এ-র চাহিদা সহজেই পূরণ হয়। এর ফলে ত্বক ভালো থাকে। দেহে একাধিক হরমোনের ভারসাম্য বজায় থাকে। আবার লাল ফল হিসেবে স্ট্রবেরি জাতীয় ফল খেলেও উপকার পাওয়া যায়। এতে চোখের উপকার হয়। এর জেরে শুষ্ক চোখ বা ড্রাই আইয়ের মতো রোগের ঝুঁকিও কমে।
সবুজ (Rainbow Diet)
সবুজ সব্জি স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। বিশেষত পালং শাক, লাউ, পটলের মতো সবুজ সব্জি নিয়মিত খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তারা জানাচ্ছে, এই ধরনের সব্জিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন থাকে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। এই ধরনের সব্জি অন্ত্র এবং লিভারের জন্য খুবই উপকারী। তাই নিয়মিত সবুজ সব্জি খাদ্যতালিকায় রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন তাঁরা। সবুজ ফল হিসেবে কিউই কিংবা নাশপাতি রাখারও পরামর্শ দিচ্ছে বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তারা জানাচ্ছে, এই ধরনের ফলে ফাইবার, ভিটামিন সি থাকে। ফলে শরীরে রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়ে।
হলুদ
পেঁপে, কলা কিংবা আমের মতো ফল নিয়মিত খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে পুষ্টিবিদদের একাংশ। তারা জানাচ্ছে, পরিমিত পরিমাণে এই ধরনের ফল নিয়মিত খেলে শরীরে একাধিক উপকার পাওয়া যায়। শিশুর বয়স ছ'মাস হলেই তাকে নিয়মিত একটা কলা খাওয়ানো উচিত। এতে শরীরে প্রয়োজনীয় আয়রনের চাহিদা সহজেই পূরণ হয়। পেঁপে অন্ত্র ভালো রাখে। এতে হজমের গোলমাল কম হয়। আবার আম (Rainbow Diet) ত্বক ভালো রাখতে বিশেষ সাহায্য করে। আমে রয়েছে কার্বোহাইড্রেট। এতে শরীর বাড়তি এনার্জি পায়। পাশপাশি হলুদ রঙের বেল পেপার জাতীয় সব্জি নিয়মিত রান্নায় দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে পুষ্টিবিদদের একাংশ।
বেগুনি এবং নীল
পুষ্টিবিদদের একাংশ জানাচ্ছে, স্থূলতা রুখতে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করবে ডায়েট চার্টের এই বেগুনই রং। তারা জানাচ্ছে, নিয়মিত খাদ্য তালিকায় বেগুনের তরকারি রাখা যেতে পারে। কারণ, বেগুনে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। তাই অল্প পরিমাণ বেগুন খেলেও তাড়াতাড়ি পেট ভরে যায়। তাই স্থূলতা রুখতে বেগুন সাহায্য করে। আবার বেগুনে ভিটামিন বি-সিক্স রয়েছে। এই উপাদান হৃদরোগ রুখতে বিশেষ সাহায্য করে। তাই বেগুন (Rainbow Diet) অত্যন্ত উপকারী।
পাশপাশি নিয়মিত আঙুর খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তারা জানাচ্ছে, শরীরকে ডিহাইড্রেশন থেকে বাঁচাতে আঙুর সবচেয়ে বেশি সাহায্য করে।
DISCLAIMER: এই প্রতিবেদনটি বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী লেখা। এর সঙ্গে মাধ্যম-এর কোনও সম্পর্ক নেই। মাধ্যম এর কোনও দায় নিচ্ছে না। এখানে বলা যে কোনও উপদেশ পালন করার আগে অবশ্যই কোনও চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours