Good Sleep Benefits: বসে কাজ নয়! প্রতিদিন ব্যায়াম ও পর্যাপ্ত ঘুমই সুস্থ থাকার রসায়ন

Health Tips: প্রতিটি মানুষের সুস্থ জীবন ও দীর্ঘ জীবনীশক্তির জন্য পরিমিত ঘুমের প্রয়োজন
sleep-better
sleep-better

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: শরীর ও মনের সার্বিক সুস্থতায় পর্যাপ্ত ঘুমের গুরুত্ব (Good Sleep Benefits) অপরিসীম। এক জন পূর্ণবয়স্ক মানুষের ক্ষেত্রে প্রতি দিন অন্তত ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা নিরবিচ্ছিন্ন ঘুমের প্রয়োজন। ঘুম অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়া। প্রতিটি মানুষের সুস্থ জীবন ও দীর্ঘ জীবনীশক্তির জন্য পর্যাপ্ত ঘুমের প্রয়োজন অনস্বীকার্য। বলা হয়ে থাকে ঘুম আর ব্যায়াম যথার্থ শয্যাসঙ্গী। ভালো ঘুম শরীরের কার্যক্ষমতা বাড়াতে পারে। আর ব্যায়াম শরীর এবং পেশী মজবুত রাখে। ঘুম কম হলে একজনের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হতে পারে।

ঘুম ও ব্যায়াম

ব্রেন বা মস্তিষ্কে বেশি পরিমাণে অ্যাডনোসিন তৈরির ক্ষেত্রে ব্যায়ামের একটি রাসায়নিক প্রভাব রয়েছে, আর অ্যাডেনোসিন আমাদের মধ্যে  ঘুমের ভাব (Good Sleep Benefits) তৈরি করে। কয়েকটি সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে যে উচ্চ-তীব্রতার (হাই ইনটেনসিটি)ব্যায়ামের ফলে ঘুমবর্ধনকারী হরমোন অ্যাডেনোসিন উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায়। গবেষণায় প্রমাণিত, ব্যায়াম শরীরকে ক্লান্ত করে দেয় আর ঘুম বাড়ায়। শরীর সক্রিয় থাকলে সারাদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে ওয়ার্কআউট করলে আর পরিমিত ঘুমোলে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কমে। ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকিও কমে যায়।

বসে থেকে কাজ নয়

দীর্ঘক্ষণ বসে থাকার অভ্যাস এখন সবার মধ্যেই তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে কর্মজীবীরা বাধ্য হয়েই বসে কাজ করেন। শুধু অফিসের কারণেই নয়, অনেক তরুণরাও ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে ল্যাপটপ বা কম্পিউটার ব্যবহার করেন। একটানা বা দিনের বেশিরভাগ সময় বসে থাকার ফলে নিজের অজান্তেই নানা রোগের ঝুঁকি বাড়াচ্ছেন অনেকেই। জানলে অবাক হবেন, মাত্রাতিরিক্ত বসে থাকার কারণে আয়ু কমে যেতে পারে। এ ছাড়াও আক্রান্ত হতে পারেন হৃদরোগ, ডায়াবেটি-সহ স্থূলতায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, অতিরিক্ত বসে থাকার কারণে আয়ু অনেকখানি কমে যায়। এর মূল কারণ হলো কঠিন ও দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত হওয়া। এটা ঠিক নয় যে, ওয়ার্ক আউট বা এক্সারসাইজ করলে আয়ু বাড়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে শরীর সুস্থ রাখতে অনেকখানি সাহায্য করে শরীরচর্চা। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, টানা বসে থাকার কারণে অনেকেরই ডিমেনশিয়া বা ভুলে যাওয়ার রোগ দেখা দেয়। এ ছাড়া হার্টের অসুখ, উচ্চ রক্তচাপ, স্ট্রোক, ডায়াবেটিস এসব রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই দীর্ঘক্ষণ না বসে একটু হাঁটাচলা করুন। টানা বসে থাকায় আপনার মেরুদণ্ড, পিঠ ও ঘাড়ে চাপ পড়ে। তাই পিঠ ও কোমরে ব্যথা শুরু হয়। এক্ষেত্রে যতো আরামদায়ক চেয়ারই বেছে নেওয়া হোক না কেন, দিন শেষে এই ব্যথা থাকবেই। তাই চেষ্টা করুন টানা বসে না থেকে আধা ঘণ্টা পরপর উঠে হাঁটাচলা করা।

কতক্ষণ ওয়ার্কআউট করবেন

 সারা দিনে আপনার ঘুমনোর সময়, বসে থাকার সময় হিসেব করে সেই অনুপাতে ওয়ার্কআউট করুন। বর্তমানে অনিয়মিত জীবনযাপনের কারণে সবার মধ্যেই ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ছে। সেই সঙ্গে একটানা বসে থাকার ফলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়। এর কারণ হলো শরীর থেকে কোনো ক্যালরি বা ফ্যাট না ঝরানো। যে কারণে ইনসুলিন হরমোন ক্ষরণ কম হয় ও রক্তে চিনি ও কোলেস্টেরল এর মাত্রা বেড়ে যায়। তাই পর্যাপ্ত ঘুম ও ব্যায়াম প্রয়োজন। আপনার যদি টানা বসে থাকেন; তাহলে ওজন বেড়ে যেতে পারে। এ ছাড়াও শরীরের নিম্নাঙ্গে মেদ জমে। এজন্য অতিরিক্ত ওজন যাতে না বেড়ে যায়, এজন্য নিয়মিত ওয়ার্ক আউট করুন। পাশাপাশি বসে থাকার পরিমাণ কমাতে হবে। মাত্রাতিরিক্ত বসে কাজ করার কারণে অনেকেরই ঠিকমতো ঘুম হয় না। এক্ষেত্রে ঘুমের ব্যাঘাতের কারণে দুশ্চিন্তার মাত্রা বেড়ে যায়। নিয়মিত শরীরচর্চা বার্ধক্য ঠেকাতে পারে।

আরও পড়ুন: শিক্ষকদের আদর্শ আচরণবিধি নিয়ে নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের

কতক্ষণ ঘুমোবেন

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল স্লিপ ফাউন্ডেশন বলছে, বয়স অনুযায়ী মানুষের ঘুমের (Good Sleep Benefits) সময়টাও ভিন্ন হবে। শৈশবে, কৈশোরে, তারুণ্যে, যৌবনে আর বার্ধক্যে ঘুমের চাহিদাও আলাদা আলাদা। যেমন শিশুদের একটু বেশি ঘুমাতে হয় প্রবীণ ও প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায়। শূন্য থেকে ৩ মাস বয়সি শিশুদের ১৪ থেকে ১৭ ঘণ্টা ঘুমানো প্রয়োজন। ৪ মাস থেকে ১১ মাস বয়সি শিশুদের জন্য ১২ থেকে ১৫ ঘণ্টা ঘুম দরকার হয়।  ১ থেকে ২ বছর বয়সি শিশুদের দরকার হয় ১১ থেকে ১৪ ঘণ্টার ঘুম। ৩ থেকে ৫ বছর বয়সিদের জন্য ১০ থেকে ১৩ ঘণ্টা। ৬ থেকে ১৩ বছর বয়সি শিশুদের রাতে অন্তত ৯-১১ ঘণ্টা ঘুমানো প্রয়োজন। তবে নিয়মিত ৭-৮ ঘণ্টা ঠিকঠাক ঘুমাতে পারলেও ওরা নিজেকে চালিয়ে নিতে পারে।  ৮-১০ ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন ১৪ থেকে ১৭ বছর বয়সিদের। ১৮ থেকে ২৫ বছর বয়সি মানুষের রাতে ৭-৯ ঘণ্টা ঘুমানো প্রয়োজন। ২৬ থেকে ৬৪ বছর বয়সি মানুষের রাতে ৭-৯ ঘণ্টা ঘুমানো প্রয়োজন। ৬৫ বছরের চেয়ে বেশি বয়সিদের জন্য ঘুমানো প্রয়োজন ৭-৮ ঘণ্টা। স্বাস্থ্য বিজ্ঞান বলছে, অনশনে মানুষ ১৪ দিন বাঁচতে পারে। না ঘুমিয়ে ১০ দিনের বেশি বাঁচা যায় না। তাই শরীর সুস্থ রাখতে, কাজ ভালো করতে ও মগজকে রিচার্জ করতে ঘুম অত্যন্ত জরুরি। 

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

 

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles