মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: সারাদেশ জুড়ে আজকে সাড়ম্বরে পালিত হচ্ছে হনুমান জয়ন্তী। ভগবান হনুমানকে সাহস এবং শক্তির প্রতীক বলে মনে করা হয়। হিন্দুদের বিশ্বাস রয়েছে, ভগবান হনুমানের উদ্দেশ্যে হনুমান চালিশা পাঠ করলে জীবনের সকল সমস্যার সমাধান হয়। সমস্ত বাধা বিঘ্ন থেকে ভক্তকে রক্ষা করেন হনুমান। ভক্তদের উদ্ধার করেন স্বয়ং বজরংবলী। জানা যায়, ভগবান হনুমানকে উৎসর্গ করে হনুমান চালিশা লিখেছিলেন তুলসীদাস। চল্লিশটি শ্লোকের সমাহার হল এই হনুমান চালিশা (Hanuman Chalisa)।
কারাগারেই রচিত হয় হনুমান চালিশা
কবি তুলসীদাস ছিলেন সম্রাট আকবরের সময়কালের। সে সময় সম্রাট আকবর তুলসীদাসকে বলেন যে রামচন্দ্রকে দর্শন করাতে হবে। এর উত্তরে তুলসীদাস দাবি করেন যে তিনি কোনও জাদু জানেন না। তবে শ্রীরামচন্দ্রের কৃপাতে অনেক কিছুই সম্ভব হতে পারে। তুলসীদাস আরও বলেন, ‘‘তাঁর দর্শন এভাবে পাওয়া যায় না। অন্তর থেকে ডাকলে তিনি সাড়া দেন।’’ তুলসীদাসের এ কথা বিশ্বাস করতে চাননি আকবর। তখনই তিনি রামচরিত মানসের রচয়িতাকে কারাগারে বন্দি করেন। সেই কারাগারে বসেই হনুমান চালিশা (Hanuman Chalisa) লেখেন তুলসীদাস। প্রচলিত গল্প অনুযায়ী চল্লিশতম শ্লোক যেদিন লেখেন তুলসীদাস, সেদিন এক বিরাট বানর বাহিনী আকবরের প্রাসাদ ভাঙচুর করে। রীতিমতো তান্ডব চালায়। পরবর্তীকালে মুঘল সম্রাট তাঁর নিজের ভুল বুঝতে পারেন, ক্ষমা চান এবং মুক্ত করেন তুলসীদাসকে।
জীবনের অনেক সমস্যার সমাধান করে হনুমান চালিশা পাঠ
হনুমানের (Hanuman Chalisa) আশীর্বাদ পাওয়ার জন্য হনুমান চালিশা পাঠ আবশ্যিক বলেই জানাচ্ছেন শাস্ত্রবিদরা। মনে করা হয়, প্রতি মঙ্গলবার যে ব্যক্তি হনুমান চালিশা পাঠ করেন এবং ভগবান হনুমানের পূজা করেন তাঁর জীবনের সমস্ত সমস্যার সমাধান হয়। হনুমান চালিশা পাঠ করলে শনি সাড়ে সাতি দশা থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়। এ কথা বলছেন জ্যোতিষীরা। এর পাশাপাশি অতীতের আতঙ্ক যদি পিছু না ছাড়ে তাহলে দারুন কাজে দেয় হনুমান চালিশা পাঠ। নেতিবাচক চিন্তা অযথা ভয় উদ্বেগের সমস্যা রয়েছে যাঁদের, তাঁরাও হনুমান চালিশা পাঠ করতে পারে।
কখন পাঠ করবেন হনুমান চালিশা
তবে কখন পাঠ করবেন হনুমান চালিশা (Hanuman Chalisa)? এর উত্তরে জ্যোতিষীরা জানাচ্ছেন, সকালে কিংবা সন্ধ্যায় হনুমান চালিশা পাঠ করা যেতে পারে। সকালে স্নান করে, পরিচ্ছন্ন পোশাকে হনুমান চালিশা পাঠ করুন অথবা সন্ধ্যায় যদি আপনি হনুমান চল্লিশা পাঠ করতে চান তাহলে পরিষ্কার ভাবে নিজের হাত পা ধুয়ে করতে হবে। জ্যোতিষীরা আরও জানাচ্ছেন, যদি আপনার কোনও খারাপ স্বপ্ন আসে তাহলে বালিশের নিচে হনুমান চালিশা রাখা যেতে পারে এবং এতে তৎক্ষণাৎ ফল পাওয়া যায়। প্রতিদিন হনুমান চালিশা পাঠ করলে মানসিক চাপ থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়। বর্তমানে দৈনন্দিন জীবনে স্ট্রেস থেকে মুক্তি পেতে হনুমান চালিশা আপনার বড় রক্ষাকবচ হতে পারে।
কীভাবে পাঠ করবেন হনুমান চালিশা (Hanuman Chalisa)
তবে হনুমান চালিশা পাঠ করতে গেলে বেশ কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম রীতি মেনে চলাই উচিত বলে জানাচ্ছেন শাস্ত্রবিদরা। কোন কোন নিয়ম মেনে হনুমান চালিশা পাঠ করবেন?
- হনুমান চালিশা পাঠ করার সময় কুশ বা অন্য কোন আসন ব্যবহার করুন।
- হনুমান চালিশা পাঠ শুরু করার আগে, গণেশের আরাধনা করবেন।
- এরপরে ভগবান রাম এবং সীতা মাতাকে স্মরণ করবেন।
- তারপরে বজরংবলীর সামনে ধূপকাঠি ও প্রদীপ জ্বালিয়ে ফুল অর্পণ করবেন।
- এরপরে হনুমান চালিশা পাঠ শুরু করুন। তারপরে পুনরায় ভগবান রামের স্মরণ করুন।
- সবশেষে হনুমানজিকে বোঁদে বা বেসনের লাড্ডু ভোগ নিবেদন করুন।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours