মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ‘বিষ্ণু ইন্ডাস্ট্রিয়াল কেমিক্যাল কোম্পানি’। নামটা চেনেন? ছোট করে বলি, VICCO। হ্যাঁ, এবার নিশ্চয় চিনতে পেরেছেন? ছোটবেলা থেকেই যে কোম্পানির সঙ্গে আমরা পরিচিত, সেই কোম্পানির কর্ণধার পেনধারকর শূন্য থেকে শুরু করেছিলেন তাঁর জীবন, যাঁর প্রতিষ্ঠানের টার্নওভার এখন ৫০০ কোটির মাত্রা ছাড়িয়ে ফেলেছে (Success Story)। এই সবকিছুর পিছনেই আছে অক্লান্ত পরিশ্রম আর ধৈর্য।
কীভাবে লক্ষ্যে পৌঁছলেন? (Success Story)
পেনধারকর মহারাষ্ট্রের নাগরপুর জেলায় তাঁর প্রথম জীবিকা শুরু করেছিলেন একটি মুদির দোকান দিয়ে। ছোট্ট লক্ষ্য, পরিবারের ভরণপোষণ। পরে নিজের জীবিকাকে আরও মজবুত করার জন্য অন্যান্য বেশ কয়েকটি কাজ করেছিলেন (Success Story)। কিন্তু এর পর তিনি সরাসরি পরিবার নিয়ে মুম্বইয়ে পাড়ি দেন। প্রথম মুম্বইয়ের বান্দ্রাতে বসবাস শুরু করলেও শেষ পর্যন্ত পেরেলে চলে যান। সেখানে থাকাকালীন লক্ষ্য করেন, মানুষের মধ্যে অ্যালোপ্যাথিক ওষুধ ও বিদেশী প্রসাধনী পণ্যের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এই সময়েই তিনি জনপ্রিয় বিদেশী প্রসাধনী ব্র্যান্ডগুলির বিকল্প হিসাবে নিজের ব্র্যান্ড চালু করার সিদ্ধান্ত নেন।
আয়ুর্বেদিক জ্ঞান কীভাবে? (Success Story)
নানারকম প্রসাধনী দ্রব্য উৎপাদন করতে আয়ুর্বেদিক জ্ঞান অনিবার্য। তাই নিজস্ব ব্র্যান্ড ভিকো চালু করার আগে আয়ুর্বেদিক বিষয়ক জ্ঞানও পেনধারকরকে অর্জন করতে হয়েছিল। বিভিন্ন প্রাচীন শাস্ত্র অধ্যয়ন করেছিলেন তিনি। তাছাড়া তাঁর শ্যালকের কাছ থেকে নানা ভাবে সাহায্য পেয়েছিলেন, যিনি একজন আয়ুর্বেদিক ওষুধ বিশেষজ্ঞ ছিলেন।
VICCO ব্র্যান্ডের প্রথম পথচলা (Success Story)
পেনধারকর বাড়ির রান্নাঘরকেই তাঁর পণ্য প্রস্তুতকারী ইউনিট হিসাবে বেছে নিয়েছিলেন। রান্নাঘর ছাড়াও তাঁর সঙ্গে একটি গোডাউনের ব্যবস্থা করেছিলেন। ১৯৫০ এর দশকে বিদেশি টুথ পেস্টের ব্যবহার তাঁর নজরে আসে। এর পরেই তিনি চ্যালেঞ্জ জানিয়ে নিজের সম্পূর্ণ দেশীয় আয়ুর্বেদিক পদ্ধতিতে তৈরি করেন টুথ পাউডার। যেটি সেই সময় মানুষ মারাত্মক ভাবে পছন্দ করতে থাকেন। পেনধারকর নিজের পণ্যকে মানুষের কাছে আরও বেশি ভাবে পৌঁছে দেওয়ার জন্য নিজে লোকের বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার করতে থাকেন। যা আস্তে আস্তে এক বিশাল জায়গা করে নেয় মানুষের মনে। চার বছরের মধ্যে তাঁর কোম্পানি এক ভালো জায়গায় পৌঁছে যায়। ১৯৭১ সালে কেশব পেনধারকর মারা যান এবং কোম্পানির সমস্ত দায়ভার তাঁর ছেলে গজানন গ্রহণ করেন। এর পর থেকেই কোম্পানি আরও নানা পণ্যের ওপর গবেষণা করতে থাকে ও নানান প্রসাধনী সামগ্রীও তৈরি করেছিল। সেই সময়েই তৈরি হয় VICCO-র দেশীয় আয়ুর্বেদিক ক্রিম, যেটি সম্পূর্ণ হলুদের গুণে সমৃদ্ধ ছিল। এর পর ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য VICCO সুগার ফ্রি পেস্ট, মাল্টিপারপাস আয়ুর্বেদিক ক্রিম, পাউডার প্রভৃতির উৎপাদন শুরু হয় (Success Story)।
বর্তমানের VICCO
বর্তমানে কেশব পেনধারকরের তৃতীয় প্রজন্ম সঞ্জীব পেনধারকর কোম্পানির দায়ভার গ্রহণ করেছেন। আজও কোম্পানি সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে তাদের নিজস্ব পণ্য উৎপাদন করে চলছে। যা এখন শুধু ভারতবর্ষ নয়, গোটা বিশ্ব জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে (Success Story)। কোম্পানির মানও পৌঁছে গিয়েছে আকাশছোঁয়া জায়গায়। ২০২৩ হওয়া শেষ অর্থবর্ষে কোম্পানির ৫০০ কোটি টাকারও বেশি আয় হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours