মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: তাপমাত্রার হেরফের হলেও ঘাম হচ্ছে অবিরত! গরমে নাজেহাল উত্তর থেকে দক্ষিণ। মাঝেমধ্যে কালবৈশাখী সাময়িক স্বস্তি দিলেও ফের বাড়ছে তাপমাত্রা। আর তারমধ্যেই ঝুঁকি বাড়ছে ফুসফুসের সংক্রমণের (Lungs Infection)। বিশেষত করোনা সংক্রমণ হয়েছিল, এমন রোগীদের সংক্রমণ ও ভোগান্তির আশঙ্কা বেশি বলেই জানাচ্ছে চিকিৎসক মহল।
কী সমস্যা হচ্ছে?
চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, সাধারণ সর্দি-কাশির মতোই প্রথমে উপসর্গ থাকছে। তবে দেখা যাচ্ছে, বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরেই কাশির সমস্যা রয়ে যাচ্ছে। আর তারপরেই শুরু হচ্ছে শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যা। যা (Lungs Infection) বিপদ বাড়াচ্ছে।
কাদের ঝুঁকি বেশি?
চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, সাধারণত আবহাওয়ার পরিবর্তন বা ঋতু পরিবর্তনের সময়ই ফুসফুসের সংক্রমণের (Lungs Infection) মতো সমস্যা বেশি দেখা যায়। কিন্তু এ বছর দেখা যাচ্ছে, অনেকে এই গরমেও ফুসফুসের সংক্রমণের সমস্যায় ভুগছেন। বিশেষত, যাঁরা করোনা-আক্রান্ত হয়েছিলেন, তাঁদের ঝুঁকি বেশি। তাঁরা অনেক সময়ই কাশি-সর্দির মতো উপসর্গকে অবহেলা করছেন। ফলে পরে সেটা ফুসফুসের বড় কোনও সংক্রমণে পরিণত হচ্ছে। বাড়ছে বিপদ।
হাসপাতালে ভিড় বাড়ছে?
শহরের একাধিক বেসরকারি হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ফুসফুসের সংক্রমণ (Lungs Infection) নিয়ে হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা গত দু'সপ্তাহে চোখে পড়ার মতো বেড়েছে। এ প্রসঙ্গে আপোলো হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ৬০ বছরের বেশি রোগীরাই ফুসফুসের সংক্রমণ নিয়ে বেশি হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে তাঁরা কিন্তু কোনও এক সময়ে করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। মেডিকা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে, নিউমোনিয়া কিংবা ফুসফুসে সর্দি জমে যাওয়ায় মতো সমস্যা দেখা দিচ্ছে। হাসপাতালে ভর্তি করে তাঁদের চিকিৎসা জরুরি হয়ে পড়ছে। আমরি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছে, ফুসফুসের সংক্রমণে রোগী ভর্তি চোখে পড়ার মতো বাড়ছে। অধিকাংশ রোগীর হেলথ হিস্ট্রিতে কোভিড পজিটিভ রয়েছে। তারাও জানাচ্ছে, বয়স্ক রোগীরাই ফুসফুসের সংক্রমণে বেশি ভুগছেন। এই সমস্যা নিয়ে ভর্তি হওয়া রোগীর অধিকাংশের বয়স ৬০ বছরের বেশি!
কী পরামর্শ দিচ্ছে চিকিৎসক মহল?
চিকিৎসক মহলের পরামর্শ, সামান্য উপসর্গকেও (Lungs Infection) অবহেলা করা উচিত নয়। বিশেষত, যাঁরা করোনা সংক্রমণের শিকার হয়েছিলেন, তাঁদের বাড়তি সতর্ক হতে হবে। কাশি-সর্দির মতো উপসর্গ দেখা দিলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। কারণ, করোনা ভাইরাস সবচেয়ে খারাপ প্রভাব ফেলেছে ফুসফুসের উপরেই। তার উপর বায়ু দূষণের সমস্যা বাড়ছে। তাই ফুসফুসের কার্যশক্তি কমছে। সেজন্য করোনা আক্রান্তদের ফুসফুসের সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ছে। অনেক ক্ষেত্রে সাধারণ সর্দি-কাশি মনে হলেও, পরবর্তীতে তা নিউমোনিয়ার মতো জটিল রোগ তৈরি করছে। ফুসফুসের সংক্রমণ রুখতে অতিরিক্ত এসিতে থাকায় নিষেধাজ্ঞা জারি করছে বিশেষজ্ঞ মহল। বিশেষ করে, চিকিৎসকদের পরামর্শ, লং টার্ম কোভিড এফেক্ট অর্থাৎ, করোনার সুদূর প্রভাব এড়াতে স্বাভাবিক তাপমাত্রাতেই থাকা ভালো। কারণ, বদ্ধ শীতাতপনিয়ন্ত্রিত ঘরে ফুসফুসের সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে। সর্দি-কাশির মতো উপসর্গ দেখা দিলে, আইসোলেশনে থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, করোনার সংক্রমণ এখনও হচ্ছে। ফলে, বাড়িতে কারও সর্দি-কাশির উপসর্গ থাকলে, তাঁর আলাদা ঘরে থাকা দরকার। কারণ, সংক্রমণ ছড়িয়ে গেলে বিপদ বাড়বে। বিশেষ করে, যাঁর আগে করোনা হয়েছে, ফের যদি করোনা বা অন্য কোনও ভাইরাস ঘটিত রোগে আক্রান্ত হন তিনি, তাহলে তাঁর ফুসফুসের সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়। তার জন্য বিপদ আরও বাড়ে। তাই পরিবারকেও সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা।
DISCLAIMER: এই প্রতিবেদনটি বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী লেখা। এর সঙ্গে মাধ্যম-এর কোনও সম্পর্ক নেই। মাধ্যম এর কোনও দায় নিচ্ছে না। এখানে বলা যে কোনও উপদেশ পালন করার আগে অবশ্যই কোনও চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours