মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বালুরঘাট শহরের বিভিন্ন জনবহুল এলাকা ও ক্লাবের ফাঁকা জায়গায় শৌচালয় তৈরি করে দিয়েছে পুরসভা। কিন্তু তৈরির কিছুদিন পর থেকেই অনেক শৌচালয় (Public Toilet) বন্ধ। কিছু কিছু শৌচালয় বানানোর পর খোলাই হয়নি। আবার যেগুলি চালু ছিল, তার কোথাও জলে প্রচুর আয়রন, কোথাও আলোর ব্যবস্থা নেই, কোথাও নিকাশি ব্যবস্থা ভালো নয়। এই সামান্য সমস্যাগুলি দূর করতে এতদিন উদ্যোগ নেয়নি কেউই, এমনই অভিযোগ এলাকার বাসিন্দাদের।
সমস্যাটা ঠিক কী?
দীর্ঘদিন ধরে বালুরঘাট শহরে বন্ধ সাধারণ শৌচালয়গুলি (Public Toilet)। পুরবোর্ডের মেয়াদ এক বছর পার হলেও শহরের ৭৭ টি শৌচালয় এখনও তালাবন্দি অবস্থায় পড়ে রয়েছে। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ছমাস আগে পুরসভার তরফে এক কোটি টাকা বরাদ্দে ওই শৌচালয়গুলির সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু এখনও সেই কাজ শেষ হয়নি। এমনকি অধিকাংশ শৌচালয়ের কাজ শেষ হলেও তা তালাবন্দি অবস্থায় পড়ে রয়েছে। যা নিয়ে ক্ষোভ ছড়িয়েছে শহরে। এদিকে বিরোধীদের অভিযোগ, পুরসভার দায়িত্ব নিয়ে এমন বহু কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিলেও তা এখনও হয়নি। যা নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধীরা। প্রসঙ্গত, বিগত পুরবোর্ডের আমলে ২০১৭ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে শহরে নতুন ৭৭ টি সাধারণ শৌচালয় (Public Toilet) গড়ে তোলার কাজ শেষ করা হয়। মূলত নির্মল বাংলা বা স্বচ্ছ মিশনের আওতায় এই শৌচালয়গুলি গড়ে তোলা হয়। নতুন পুরবোর্ড ক্ষমতায় আসতেই এই বন্ধ থাকা শৌচালয়গুলি খুলে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছিল। 'সুডা' থেকে প্রায় ১ কোটি ৮ লক্ষ টাকা ব্যয়ে সেগুলি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়। নভেম্বর মাস থেকে সেগুলির সংস্কারের কাজ চলছে। নতুন বছরেই সেগুলি খুলে দেওয়ার কথা থাকলেও আজও তা হয়নি। যা নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে শহরে।
পৌরসভা প্রতিক্রিয়ায় কী জানাল?
এবিষয়ে বালুরঘাট পুরসভার চেয়ারম্যান অশোক মিত্র বলেন, শহরের সাধারণ শৌচালয়গুলি (Public Toilet) সংস্কারের কাজ এখনও শেষ হয়নি। কোনওটার ইলেক্ট্রিকের কাজ বাকি, কোনওটার জলের পাইপলাইনের কাজ বাকি। তাই সেগুলি তালাবন্দি অবস্থায় রয়েছে। খুব তাড়াতাড়ি সেই কাজগুলি শেষ হবে। সম্ভবত আগামী সপ্তাহেই চালু হয়ে যাবে। এছাড়াও শহরের বহু উন্নয়নের কাজ হয়েছে এবং অনেক কাজ চলছে।
সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়া
এবিষয়ে বালুরঘাটের রঘুনাথপুর এলাকার এক ব্যবসায়ী প্রদীপ দাস বলেন, আমাদের এলাকায় একটি সাধারণ শৌচালয় (Public Toilet) রয়েছে। কিন্তু তা দীর্ঘদিন ধরে তালাবন্ধ অবস্থায় পড়ে রয়েছে। বাজার এলাকায় এবং ডাক্তার দেখাতে বহু মানুষ বাইরে থেকে প্রত্যেকদিন আসে। কিন্তু তারা এই সাধারণ শৌচালয় ব্যবহার করতে না পেরে রাস্তার ধারে মূত্র ত্যাগ করছে। বালুরঘাট ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক হরেরাম সাহা বলেন, তহবাজারে যে শৌচালয় রয়েছে, তা দীর্ঘদিন সংস্কার হয়নি। যার ফলে ব্যবসায়ীদের সমস্যা হয়। এর আগে পুরসভাকে জানিয়েছিলাম, তারা এবিষয়ে আশ্বাস দিয়েছিল। কিন্তু তবুও কোনও কাজ হয়নি।
সরব বিরোধীরা
অন্যদিকে, বিরোধীরাও এবিষয়ে (Public Toilet) সরব হয়েছেন। বিজেপির জেলা কমিটির সদস্য সুমন বর্মন বলেন, তৃণমূল বোর্ড কোনও কাজই করতে পারছে না। শহরকে নির্মল বা স্বচ্ছ বললেও সামাজিক শৌচালয়গুলিকে বন্ধ করে রাখা হয়েছে। বাধ্য হয়ে ফাঁকা জায়গাতেই মূত্রত্যাগ করতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। ফলে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। আরএসপির জেলা আঞ্চলিক কমিটির সদস্য প্রলয় ঘোষ বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই শহরে বহু সামাজিক শৌচালয় (Public Toilet) বন্ধ রয়েছে। সেগুলির জন্য কোটি টাকা এসেছে। কিন্তু তবুও কেন শৌচালয়গুলি খোলা হচ্ছে না, জানি না।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours