মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ১৩ ফেব্রুয়ারি, সোমবার সকাল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বেঙ্গালুরুতে এরো ইন্ডিয়া ২০২৩-এর ১৪ তম সংস্করণের উদ্বোধন করলেন। এটি এশিয়ার বৃহত্তম এরো শো। কর্ণাটকের ইয়েলাহানকার বায়ুসেনা ঘাঁটিতে এই এয়ার শোয়ের আয়োজন করা হয়েছে। এই শোয়ের মাধ্যমে ভারতের মহাকাশ ও প্রতিরক্ষা সক্ষমতার কথা তুলে ধরা হবে। অফিসাল বিবৃতি অনুসারে, অ্যারো ইন্ডিয়া ২০২৩-র মূল ফোকাস হল দেশীয় সরঞ্জাম ও প্রযুক্তির প্রদর্শন। মেক ইন ইন্ডিয়া, মেক ফর দ্যা ওয়ার্ল্ড ভিশনের সঙ্গে তাল মিলিয়েই এই প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই শোয়ের থিম হল 'দ্যা রানওয়ে টু এ বিলিয়ন অপারচুনিটিস'। এরো শোতে ৮০টিরও বেশি দেশ অংশগ্রহণ করেছে।
বেঙ্গালুরুতে প্রধানমন্ত্রী মোদি
চার দিনের ব্যস্ত কর্মসূচি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির। তারই মধ্যে রবিবার সন্ধ্যায় বেঙ্গালুরু পৌঁছে যান তিনি। রাজ্যপাল থাওয়ারচাঁদ গেহলট এবং মুখ্যমন্ত্রী বাসভরাজ বোমাই প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান। আর আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সকাল ৯.৩০ টায় বেঙ্গালুরুর ইয়েলাহাঙ্কায় বিমান বাহিনী স্টেশনে ‘Aero India 2023’-এর ১৪ তম সংস্করণের উদ্বোধন করেন। সকাল ৯.৪০ থেকে ১০.৩০ মিনিট পর্যন্ত অনুষ্ঠানে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। প্রধানমন্ত্রী মোদি এই শোয়ে একটি ‘স্মারক ডাকটিকিট’ও প্রকাশ করেছেন।
৯৮ টি দেশের অংশগ্রহণ
সূত্রের খবর অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত এটাই সবথেকে বড় ইভেন্ট এরো ইন্ডিয়া শো-র। কারণ এই প্রথম ৯৮টি দেশ এই প্রদর্শনীতে অংশ নিচ্ছে। ৯৮ টি দেশের মোট ৮০৯ টি কোম্পানি এই অনুষ্ঠানে অংশ নেবে বলে জানা গিয়েছে। এই অনুষ্ঠানে ৩২টি দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী, ২৯টি দেশের বিমান বাহিনী প্রধান, ১০০টি বিদেশী এবং ৭০০টি ভারতীয় কোম্পানি সহ ৮০০টিরও বেশি প্রতিরক্ষা সংস্থার অংশগ্রহণ দেখা যাবে। প্রায় ৩৫,০০০ বর্গ মিটার এলাকা জুড়ে আয়োজিত করা হয়েছে এই অনুষ্ঠান। রিপোর্ট অনুসারে, ৮০৯ টি প্রতিরক্ষা সংস্থা সহ এমএসএমই এবং স্টার্ট-আপগুলি বিশেষ প্রযুক্তির অগ্রগতি এবং মহাকাশ ও প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রের দক্ষতা বৃদ্ধি প্রদর্শন করবে এই শোতে।
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য
প্রধানমন্ত্রী মোদি এদিন বলেন, “এরো ইন্ডিয়ার এই ইভেন্ট ভারতের ক্রমবর্ধমান সম্ভাবনার প্রমাণ, তেজস বিমান তার উদাহরণ। ভারত ২০২৪-২৫ সালের মধ্যে প্রতিরক্ষা রপ্তানি ৫ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করতে চায়। এতে বিশ্বের প্রায় ১০০টি দেশের উপস্থিতি প্রমাণ করে যে ভারতের প্রতি বিশ্বের বিশ্বাস কতটা বেড়েছে।”
ইভেন্টের লক্ষ্য
বায়ুসেনা সূত্রে খবর, এরো ইন্ডিয়া প্রায় ৭৫ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগের পথ প্রশস্ত করবে বলে আশা করা হচ্ছে৷ মহাকাশ ও প্রতিরক্ষা খাতে দেশের সক্ষমতা প্রদর্শনের মাধ্যমে একটি শক্তিশালী এবং আত্মনির্ভরশীল ‘নতুন ভারত’-এর উত্থানকে উন্নীত করাই এর লক্ষ্য। এছাড়াও ভবিষ্যতে কী কী অস্ত্র পাবে বায়ুসেনা, তারও ঝলক দেখা যাবে এই এয়ার শোয়ে। এছাড়াও এই অনুষ্ঠানের প্রধান লক্ষ্য হল, লাইট কমব্যাট এয়ারক্রাফ্ট (এলসিএ)-তেজস, এইচটিটি-৪০, ডর্নিয়ার লাইট ইউটিলিটি হেলিকপ্টার (এলইউএইচ), লাইট কমব্যাট হেলিকপ্টার (এলসিএইচ) এবং অ্যাডভান্সড লাইট হেলিকপ্টার (এএলএইচ) এর মত দেশীয় বিমানের রপ্তানি আরও বাড়ানো।
প্রধান প্রদর্শক
প্রধান প্রদর্শকদের মধ্যে রয়েছে, এয়ারবাস, বোয়িং, ড্যাসল্ট এভিয়েশন, লকহিড মার্টিন, ইসরায়েল এরোস্পেস ইন্ডাস্ট্রি, ব্রহ্মোস এরোস্পেস, আর্মি এভিয়েশন, এইচসি রোবোটিক্স, এসএএবি, সাফরান, রোলস রয়েস, লারসেন অ্যান্ড টুব্রো, ভারত ফোর্জ লিমিটেড, হিন্দুস্তান এরোনটিক্স লিমিটেড, ভারত লিমিটেড। ইলেকট্রনিক্স লিমিটেড (বিইএল), ভারত ডায়নামিক্স লিমিটেড (বিডিএল) এবং বিইএমএল লিমিটেড। সূত্রের খবর, প্রায় ৫ লক্ষ দর্শক এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন বলে আশা করা হচ্ছে এবং আরও লক্ষাধিক দর্শক ইন্টারনেটের মাধ্যমে সংযুক্ত হবেন। ফলে মনে করা হচ্ছে, পাঁচদিনব্যাপী এরো ইন্ডিয়ার শো দর্শকদের মন্ত্রমুগ্ধ করবে।
+ There are no comments
Add yours