Ambubachi 2022: এবছর অম্বুবাচী শুরু কবে? জেনে নিন এই বিশেষ উৎসবের মাহাত্ম্য

ধর্মীয় আচার হলেও অম্বুবাচীর সঙ্গে প্রাচীন কৃষি ব্যবস্থা জড়িয়ে রয়েছে। অম্বুবাচী একটি কৃষিভিত্তিক অনুষ্ঠানও। এর অর্থ ধরিত্রীর উর্বরাকাল।
kama
kama

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: হিন্দু ধর্মের একটি বিশেষ উৎসব হল অম্বুবাচী (Ambubachi)। লোককথা অনুসারে, আষাঢ় মাসের মৃগশিরা নক্ষত্রের তৃতীয় চরণ শেষ হলে ধরিত্রী মাতা ঋতুমতী হন। এই সময়েই পালন করা হয় অম্বুবাচী। এই সময় মাটি কাটা, জমিতে লাঙ্গল চালানো যায় না। এই সময় সমস্ত মন্দিরের দরজা বন্ধ থাকে। এই তিন দিন বিশেষভাবে নিত্য পূজা সম্পন্ন হলেও মন্দিরের দরজা কখনও জনসাধারণের জন্য খোলা হয় না।

চলতি বছর অম্বুবাচীর তারিখ (Ambubachi Mahotsav 2022)

অম্বুবাচী শুরু- ২২ জুন ২০২২ (৭ আষাঢ় ১৪২৯)

অম্বুবাচী সমাপ্ত- ২৬ জুন ২০২২ (১১ আষাঢ় ১৪২৯)

৫১টি সতীপীঠের অন্যতম সতীপীঠ  আসামের নীলাচল পাহাড়ে অবস্থিত কামাখ্যা মন্দির (Kamakhya Devalaya)। যেখান থেকেই এই অম্বুবাচী পালনের সূত্রপাত। অম্বুবাচীর সময় আসামের কামাখ্যা মন্দিরে বিশেষ উৎসবের আয়োজন করা হয়। সতীপিঠের অন্যতম এই কামাখ্যা মন্দির তন্ত্র সাধনার অন্যতম পীঠ। একান্নটি খন্ডে বিভক্ত হওয়া দেবী সতীর গর্ভ এবং যোনি পড়েছিল এখানে। এর ইতিহাস সুদূরপ্রসারী। 

অম্বুবাচীর প্রথম দিন থেকে কামাখ্যা দেবীর মন্দিরের দ্বার বন্ধ থাকে। চতুর্থদিনের স্নান ও পূজা সম্পন্ন হওয়ার পর কামাখ্যা মায়ের দর্শন করার অনুমতি দেওয়া হয়। এই সময় ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রচুর ভক্তের সমাগম হয় কামাখ্যায়। অম্বুবাচীর প্রবৃত্তির তিনদিন পর হয় অম্বুবাচী নিবৃত্তি।

পঞ্জিকা মতে আষাঢ় মাসের ৭ থেকে ১০ তারিখ গ্রামবাংলায় এই আচার-অনুষ্ঠান পালন করা হয়। পিঠে-পায়েস বানানোর রীতি আছে এই সময়। বিধবা মহিলারা এই সময় তিন দিন ধরে ব্রত পালন করে থাকেন।

আরও পড়ুন: বাড়িতে তুলসী মঞ্চ সঠিক নিয়মে রেখেছেন তো? নয়তো হতে পারে অমঙ্গল!

শাস্ত্র অনুসারে, অম্বুবাচীর তিন দিন যেকোনও মাঙ্গলিক কার্য বা শুভ কর্ম, যেমন - বিবাহ, অন্নপ্রাশন, গৃহ প্রবেশ, উপনয়ন, ইত্যাদি থেকে বিরত থাকা উচিত। কৃষিকাজ সংক্রান্ত কাজও এই সময় বন্ধ থাকে। জমিতে কোনও রকম খোঁড়াখুড়ি থেকে বিরত থাকা হয়। তবে চতুর্থ দিন থেকে কোনও বাধা থাকে না। অম্বুবাচীর নিবৃত্তির পর আবার জমিতে চাষাবাদ শুরু হয়। 

মনে করা হয়, বৈদিক যুগে কৃষিকাজ ছিল সমাজের অর্থনৈতিক ভিত্তি। তাই ধরিত্রীকে মাতৃরূপে পুজো করা হত। বর্ষায় সিক্তা পৃথিবী নতুন বছরে নতুন ফসল উত্পাদনের উপযোগী হয়ে ওঠে। তাই এই সময় কিছুদিন চাষাবাদ বন্ধ রাখা হয়। আষাঢ় মাসের শুরুতে পৃথিবী বা মাতা বসুমতি যখন বর্ষার নতুন জলে সিক্ত হয়ে ওঠে তখন তাকে ঋতুমতি নারী রূপে গণ্য করা হয়। তাই ধর্মীয় আচার হলেও অম্বুবাচীর সঙ্গে প্রাচীন কৃষি ব্যবস্থা জড়িয়ে রয়েছে। অম্বুবাচী একটি কৃষিভিত্তিক অনুষ্ঠানও। এর অর্থ ধরিত্রীর উর্বরাকাল।

এই সময় মঠ-মন্দিরের প্রবেশদ্বার বন্ধ থাকে। অম্বুবাচীর এই তিনদিন সন্ন্যাসী এবং বিধবারা বিশেষ ভাবে পালন করেন। এই সময় মহিলারা সন্তান প্রাপ্তির জন্য বিভিন্ন মাতৃমন্দিরে বিশেষ করে কামাখ্যা মন্দিরে প্রার্থনা করে থাকেন।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles