মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: কর্তব্য পালন না করার ফলে মেয়েদের যদি গার্হস্থ্য হিংসার শিকার হতে হয়, তাহলে তাতে কোনও 'ভুল' নেই। সেই ঘটনাকে 'স্বাভাবিক' বলেই মনে করে দেশের অর্ধেক ছেলে-মেয়েরা। কেন্দ্রের সমীক্ষায় উঠে এল এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য।
ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেলথ সার্ভে (NFHS) অনুযায়ী, কর্ণাটকের বেশিরভাগ বাসিন্দাই মনে করেন, মেয়েরা যদি নিজেদের দায়িত্ব পালন না করেন তাহলে স্ত্রীদের বিরুদ্ধে পারিবারিক হিংসা বা যৌন হয়রানির ঘটনা খুবই স্বাভাবিক। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য এবং পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের (Ministry of Health & Family Welfare) প্রকাশিত ওই সমীক্ষা রিপোর্টে দেখা গিয়েছে শুধু কর্ণাটক নয় দেশের প্রায় অর্ধেক পুরুষ এবং মহিলা এই যুক্তিতে একমত।
ভারতের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ নারী শারীরিক বা যৌন সহিংসতার শিকার হন, ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেলথ সার্ভে-৫ রিপোর্টে এমনটাই দেখা গিয়েছে। যদিও দেশে নারীর বিরুদ্ধে গার্হস্থ্য হিংসা ৩১.২% থেকে ২৯.৩% এ হ্রাস পেয়েছে। তবুও দেশবাসীর এই মানিসকতা চমকে দেওয়ার মতো বলে অভিমত বিশেষজ্ঞদের। ওই সমীক্ষায় দেখা গেছে যে ৩২% বিবাহিত মহিলা (১৮-৪৯ বছর) শারীরিক, যৌন বা মানসিক সহিংসতার সম্মুখীন হয়েছেন। স্বামী-স্ত্রীর সহিংসতার সবচেয়ে সাধারণ প্রকার হল শারীরিক সহিংসতা (২৮%), তারপরে মানসিক সহিংসতা এবং যৌন সহিংসতা। এর বিপরীতে, দেশে মাত্র ৪ % পুরুষ গার্হস্থ্য সহিংসতার মামলার মুখোমুখি হন।
কর্ণাটকে নারীর বিরুদ্ধে গার্হস্থ্য সহিংসতা সর্বোচ্চ ৪৮ %, বিহার, তেলেঙ্গানা, মণিপুর এবং তামিলনাড়ুর পরে। লক্ষদ্বীপে সর্বনিম্ন পারিবারিক সহিংসতা ২.১%। গ্রামীণ এলাকায় মহিলাদের মধ্যে শারীরিক সহিংসতার অভিজ্ঞতা বেশি সাধারণ (৩২%) শহরাঞ্চলে তাদের সমকক্ষদের তুলনায় (২৪%) এবং একজন মহিলার সহিংসতার অভিজ্ঞতা ক্রমবর্ধমান স্কুলিং এবং সম্পদের সঙ্গে দ্রুত হ্রাস পায়।
সেন্টার ফর সোশ্যাল রিসার্চের রঞ্জনা কুমারী বলেন," এই সমীক্ষা প্রমাণ করে দেশবাসী নারীর উপর গার্হস্থ্য হিংলার ঘটনাকে সাধারণ বলে মনে করে। এতে কোনও অপরাধ লুকিয়ে আছে বলে মানেন না তাঁরা। শুধু পুরুষেরা নয়, মেয়েরাও এই নীতিকেই মেনে নিয়েছে।" এই ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে গেলে নারীশিক্ষার উপর জোর দেওয়ার প্রয়োজন বলে মনে করেন রঞ্জনা।
+ There are no comments
Add yours