মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: এবারে খননকার্যের পর উদ্ধার করা হল প্রায় ১৮ লক্ষ বছর পুরনো মানুষের দাঁত। এটি উদ্ধার করেছে জর্জিয়ার প্রত্নতাত্ত্বিকরা। ধারণা করা হচ্ছে, এটি আদিম যুগের মানুষের প্রাথমিক প্রজাতির দেহাবশেষ। তারা জানিয়েছেন, এটি হোমিনিড (Hominid) প্রজাতির মানুষের দাঁত।
আপনারা নিশ্চয় সবাই জানেন, জীবজগতে মানুষেরা প্রথমে প্রাইমেট (primate) বর্গের অন্তর্ভুক্ত ছিল। তবে মানুষ ছাড়াও আরো বেশ কিছু প্রাণী রয়েছে প্রাইমেট বর্গের মধ্যে। যেমন বানর ও এপ। আর এই প্রাইমেট বর্গের মধ্যেই ছিল এই হোমিনিড বা হোমিনিন (Hominid or Hominin) প্রজাতির মানুষ।
জর্জিয়ার জাতীয় প্রত্নতত্ত্ব কেন্দ্র জানিয়েছে, জর্জিয়ার রাজধানী তিবিলিসির (capital Tbilisi) প্রায় ১০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে ওরোজমানি (Orozmani) গ্রামের কাছে দাঁতটি আবিষ্কার করেছেন জর্জিয়ান ন্যাশনাল মিউজিয়ামের একজন প্রত্নতাত্ত্বিক জিওর্জি কোপালিয়ানি (Giorgi Kopaliani) ও তাঁর একটি টিম।
আরও পড়ুন: এ কি অদ্ভুত কাণ্ড! পোল্যান্ডের গ্রাম থেকে উদ্ধার মহিলা 'ভ্যাম্পায়ার'-এর কঙ্কাল!
আরও জানা গিয়েছে, ওরোজমানি প্রত্নতাত্ত্বিক সৌধের কাছে এর আগেও পাথরের হাতিয়ার ও আদিম যুগের বিভিন্ন প্রাণীর দেহাবশেষ পাওয়া গেছে। এই ওরোজমানি গ্রামটি দমনিসির (Dmanisi) কাছাকাছি অবস্থিত। আর ওরোজমানির পাশ্ববর্তী দমনিসিতেই ১৯৯০ এর শেষ দশকে ও ২০০০ এর প্রথম দশকে ১৮ লক্ষ বছর আগের মানুষের মাথার খুলি পাওয়া গিয়েছিল।
প্রত্নতাত্ত্বিক জিওর্জি কোপালিয়ানি বলেন, তাঁর নেতৃত্বে খনন কাজ শুরু হয়েছিল। তারপর তাঁরা তাঁদের জীবাশ্মবিদদের সাথে যোগাযোগ করে ও সেখান থেকে নিশ্চিত করা হয় যে এটি হোমিনিডের দাঁত ছিল। তিনি আরও জানান, ২০১৯ সালে ওরোজমানি গ্রামে খনন কাজ শুরু করে কোপালিয়ানি ও তাঁর দল। কিন্তু ২০২০ সালে করোনাভাইরাস মহামারির কারণে সেটি থেমে যায়। পরে ২০২১ সালে এই খনন কাজ আবার শুরু হয়। তারপর সেখান থেকে প্রাগৈতিহাসিক পাথরের সরঞ্জাম এবং বিলুপ্ত প্রজাতির ধ্বংসাবশেষ যেমন- সাবার-দাঁতযুক্ত বিড়াল এবং এট্রুস্কান নেকড়ে আবিষ্কার করা হয়েছে।
কোপিলিয়ানির মতে, গত সপ্তাহে আবিষ্কৃত হওয়া দাঁতটি আফ্রিকার বাইরে পাওয়া প্রাথমিক মানব প্রজাতির প্রাচীনতম প্রমাণগুলির মধ্যে একটি। তিনি জানিয়েছেন, এই দাঁতের উপর ভিত্তি করে ও এই সাইট থেকে যেসব তথ্য পাওয়া গেছে ও যাবে, তা দেখে এই এলাকার পাশাপাশি দমনিসিতে হোমিনিনদের জনসংখ্যা সম্পর্কে ধারণা করতে পারবে। তিনি এখনও খনন চালিয়ে যেতে চান। কারণ এসব নিদর্শন মানবজাতির প্রাথমিক বিবর্তন ও অভিবাসন সম্পর্কে নতুন তথ্য জানতে প্রত্নতাত্ত্বিক ও বিজ্ঞানীদের সাহায্য করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
+ There are no comments
Add yours